চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গেঁড়ো খুলে 'ট্রেবল' জিতল ম্যানসিটি I

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গেঁড়ো খুলে 'ট্রেবল' জিতল ম্যানসিটি

গোটা মৌসুম দুর্দান্ত ফুটবল খেলা সিটি যেন ফাইনালে কিছুটা হলেও স্নায়ুচাপে ভুগছিল। অন্যদিকে ইন্টার খেলেছে নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে। তাতে ম্যাচটা হয়ে উঠেছিল অনেক বেশি ট্যাকটিকাল। যেখানে শেষ হাসি পেপ গার্দিওলার। স্প্যানিশ কোচের হাত ধরেই ইতিহাস গড়ল প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমবারের মতো জিতল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে জিতল এক মৌসুমে ট্রেবল শিরোপা। গার্দিওলাও ইতিহাসে নিজের জায়গাটা পাকা করলেন

গোটা মৌসুম দুর্দান্ত ফুটবল খেলা সিটি যেন ফাইনালে কিছুটা হলেও স্নায়ুচাপে ভুগছিল। অন্যদিকে ইন্টার খেলেছে নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে। তাতে ম্যাচটা হয়ে উঠেছিল অনেক বেশি ট্যাকটিকাল। যেখানে শেষ হাসি পেপ গার্দিওলার। স্প্যানিশ কোচের হাত ধরেই ইতিহাস গড়ল প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমবারের মতো জিতল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে জিতল এক মৌসুমে ট্রেবল শিরোপা। গার্দিওলাও ইতিহাসে নিজের জায়গাটা পাকা করলেন।

স্নায়ুচাপের ম্যাচে দুই দলই কিছুটা ধীরলয়ে শুরু করে। দেখেশুনে আক্রমণে উঠেছে। তাই  খুব বেশি পরিষ্কার গোলের সুযোগ তৈরি হয়নি প্রথমার্ধে। বল দখলে সিটি পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে সমানে-সমান দুই দল। মাত্র দুটি শট লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে সিটি। ইন্টার মিলানেরও মাত্র একটি শট লক্ষ্যে ছিল।

বের্নার্দো সিলভা ৫ মিনিটের মাথায় ডি বক্সে ঢুকে শট নেন, কিন্তু লক্ষ্যে থাকেনি। ২৫ মিনিটে বারেল্লার দূরপাল্লার শট লক্ষ্যে থাকলে বিপদ হতে পারত সিটির। তৈরি ছিলেন না সিটির গোলরক্ষক এদারসন।  ২৬-২৮ মিনিটে টানা কয়েকটা আক্রমণ চালিয়েও গোল পেতে ব্যর্থ হয় সিটিজেনরা। ইন্টার মিলানের জমাট রক্ষণ কিছুতেই ভাঙতে পারেনি হলান্ড-গ্রিলিশরা।

৩০ মিনিটে মাঠে পড়ে যান কেভিন ডি ব্রুইনা। সে সময় শুশ্রূষা নিয়ে ফের মাঠে ফিরলেও খেলছিলেন অস্বস্তি নিয়ে। ৩৫ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় ম্যানসিটি।  অস্বস্তিতে ভোগা ডি ব্রুইনাকে মাঠ থেকে তুলে নেন গার্দিওলা। নামান ফিল ফোডেনকে।

৫৬ মিনিটে এডেন জেকোকে তুলে লুকাকুকে নামান ইন্টার কোচ। ৫৮ মিনিটে সিটির গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন মার্টিনেজ। গায়ে মেরে বসেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। বল পেয়ে প্রতিআক্রমণে ওঠে সিটি। তবে ডি বক্সে ঢোকার আগেই ফোডেনকে ট্যাকল করে থামান বারেল্লা। রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখান।

কিছুতেই গোল হচ্ছিল না । বলা ভালো কোন দলই মরিয়া হয়ে গোলের চেষ্টাই করছিল না। অবশেষে একটা কার্যকর আক্রমণে ইন্টার মিলানের রক্ষণদূর্গ ভেঙে পড়ল। ৬৮ মিনিটে একটা সংঘবদ্ধ আক্রমণে বল পেয়ে দারুণ শটে গোল করলেন সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রি। তার জোরাল শটের কোন জবাবই ছিল না ইন্টারের গোলরক্ষক ওনানার কাছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন বল জালে জড়িয়ে যেতে।

পরের মিনিটেই গোল প্রায় শোধ দিয়েই ফেলেছিল ইন্টার। প্রতিআক্রমণে উঠে ঢুকে পড়েছিল সিটির রক্ষণভাগে। ডামফ্রির ক্রসে যে হেড নিয়েছিলেন ডিমারকো তা এদারসনকে পরাস্ত করলেও ফেরে ওপরের পোস্টে লেগে। ফিরতি বলে ফের ডিমারকো হেড নিয়ে বল দিয়েছিলেন লুকাকুকে। অবিশ্বাস্যভাবে সুযোগ নষ্ট করেন এই বেলজিয়ান। ৭৩ মিনিটে ফের সুযোগ নষ্ট করেন লুকাকু।

৭৮ মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন ফোডেন। কিন্তু ডিবক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে যে শট নেন তা সহজেই নিজের আয়ত্বে নেন ওনানা।

৮৮ মিনিটে দারুণ সেভ করে দলকে বাঁচান সিটির গোলরক্ষক এদারসন। অবশ্য সুবিধাজনক জায়গা থেকে লুকাকু দুর্বল হেড নেওয়ায় কিছুটা হলেও সুবিধা পেয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান। ফিরতি বল ক্লিয়ার করেন রদ্রি। 

ম্যাচে সমতায় ফিরতে একের পর এক চেষ্টা করে গেছে ইন্টার। কিন্তু শেষের সময়টুকু দারুণভাবে রক্ষণ সামলেছে গার্দিওলার শিষ্যরা। শেষ বাঁশি বাজতেই ইতিহাস গড়ার আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন সিটির খেলোয়াড়রা। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গড়েই রেকর্ডবুকে জায়গা করে নিয়েছে গার্দিওলার শিষ্যরা। দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে জিতেছে ট্রেবল শিরোপা। প্রিমিয়ার লিগ ও ঘরোয়া এফএ কাপের পর জিতে নিলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও। 

সিটির পাশাপাশি রেকর্ডবুকে জায়গা করে নিলেন গার্দিওলাও। ইতিহাসের একমাত্র কোচ হিসেবে দুটি ট্রেবলের মালিক তিনিই। সিটির আগে বার্সেলোনাকেও জিতিয়েছিলেন তাদের ইতিহাসের প্রথম ট্রেবল।